Sunday, September 21, 2025

ফোন ভালো রাখতে কিকি করবেন?


ফোন ভালো রাখতে কিকি করবেন?


 বর্তমান যুগে স্মার্টফোন ছাড়া এক মুহূর্তও কল্পনা করা যায় না। অফিসের কাজ, অনলাইন ক্লাস, বাজার করা কিংবা বিদ্যুৎ-গ্যাস বিল দেওয়া—সব কিছুতেই এখন মোবাইল অপরিহার্য। সারাদিনই ফোন হাতে থাকে, অনেক সময় চার্জে দিয়ে রাতেও সেটি চালু রাখা হয়।

কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন, সারাক্ষণ সচল থাকা এই ডিভাইসটিরও প্রয়োজন হয় ‘বিশ্রামের’? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফোনে যেমন নিয়মিত চার্জ দেওয়া জরুরি, তেমনি ফোনকে সপ্তাহে অন্তত একবার বন্ধ করে রাখা দরকার। মাত্র এক মিনিটের জন্য হলেও ফোন রিস্টার্ট করলে এর আয়ু বেড়ে যায় এবং ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি কমে।


কেন ফোনকে বিশ্রাম দেওয়া দরকার?

১. ব্যাটারির স্বাস্থ্য রক্ষায়

ফোন সবসময় চালু থাকলে ব্যাটারির ওপর চাপ পড়ে। অতিরিক্ত গরম হয় এবং দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায়। সপ্তাহে অন্তত একবার রিস্টার্ট করলে ব্যাটারি ঠান্ডা হওয়ার সুযোগ পায় এবং দীর্ঘদিন ভালো থাকে।

২. ফোনের পারফরম্যান্স উন্নত হয়

অ্যাপ বন্ধ হলেও অনেক সময় কিছু মেমোরি ব্যবহৃত হতে থাকে (মেমোরি লিক), যা ফোনকে ধীরে ধীরে স্লো করে দেয়। সপ্তাহে একবার রিস্টার্ট করলে এসব সমস্যা কমে যায় এবং ফোন দ্রুত কাজ করে।

৩. নেটওয়ার্ক সমস্যা সমাধান হয়

বিশেষ করে পুরোনো ফোনে অনেক সময় হঠাৎ মোবাইল ডাটা বা ওয়াইফাই কাজ করা বন্ধ করে। ফোন রিস্টার্ট করলে নেটওয়ার্ক নতুনভাবে কানেক্ট হয়, ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারেও ঝামেলা থাকে না।

৪. অপ্রয়োজনীয় ক্যাশ ডাটা মুছে যায়

ফোন দীর্ঘদিন চালু রাখলে ক্যাশড ডাটা জমে ফোনের গতি কমিয়ে দেয়। রিস্টার্ট করলে এই অপ্রয়োজনীয় ডাটা মুছে গিয়ে ফোন আবার দ্রুত কাজ করে।

৫. ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে

অনেক অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে, যা ব্যাটারির খরচ বাড়ায় ও র‍্যাম দখল করে রাখে। রিস্টার্ট করলে এসব অ্যাপ বন্ধ হয়ে যায় এবং ফোনের কর্মক্ষমতা বাড়ে।


কতবার রিস্টার্ট করবেন?

বিশেষজ্ঞদের মতে, সপ্তাহে অন্তত একবার ফোন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে এক মিনিটের জন্য বিশ্রাম দেওয়া উচিত। এতে ফোন ও ব্যাটারি দুটোই সুস্থ থাকে। তবে যদি ফোন পুরোনো হয় বা ব্যবহার অনেক বেশি হয়, তাহলে সপ্তাহে ২–৩ বার রিস্টার্ট করলে আরও ভালো ফল পাওয়া যাবে।


শেষ কথা

স্মার্টফোন আমাদের জীবনকে সহজ করেছে, তবে এরও নিয়মিত যত্ন নেওয়া দরকার। যেমন চার্জ দিয়ে সচল রাখি, তেমনি মাঝে মাঝে রিস্টার্ট করে বিশ্রাম দেওয়া উচিত। সপ্তাহে একবারের এই ছোট্ট অভ্যাস শুধু ফোনের আয়ু বাড়াবে না, ব্যবহারকারীরও অনেক ঝামেলা কমিয়ে দেবে।



আরোও জানতে ক্লিক করুন


Saturday, September 20, 2025

টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA) — কেন দরকার, কীভাবে কাজ করে ও কিভাবে চালু করবেন

 

টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবহার করা প্রয়োজন কেন?

টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA): নিরাপত্তার যুক্ত বীমা

ঘরের চাবি হারালে ক্ষতি হয়—ভার্চুয়াল জগতে পাসওয়ার্ড হারালে বা চুরি হলে তা আরও জটিল ফল আনতে পারে। তাই আধুনিক অনলাইন নিরাপত্তার জন্য টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA) জরুরি হয়ে উঠেছে। নিচে সহজ ভাষায় 2FA কী, কেন প্রয়োজন, এবং কিভাবে কাজ করে তা ব্যাখ্যা করা হলো।

টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কী?

টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA) হচ্ছে মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের (MFA) একটি রূপ যেখানে লগইন বা লেনদেনের সময় দুইটি আলাদা প্রমাণীকরণ কাজ করে — যাতে একজন বিদ্যমান পাসওয়ার্ড চুরির মাধ্যমে সহজেই অ্যাক্সেস পায় না। সব 2FA-ই MFA হলেও সব MFA 2FA নয় — কারণ MFA পারে তিন বা তারও বেশি স্তরও থাকতে।

প্রমাণীকরণের তিনটি ধরন

  1. আপনি যা জানেন — পাসওয়ার্ড, পিন বা ব্যাংক কার্ডের পিন।

  2. আপনার কাছে যা আছে — মোবাইল ফোনে ওটিপি, অ্যাপ-জেনারেটেড কোড, বা হার্ডওয়্যার টোকেন (যেমন RSA টোকেন)।

  3. আপনি কে — বায়োমেট্রিক্স যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ফেস আইডি বা আইরিস স্ক্যান।

উদাহরণ: আপনার ডেবিট কার্ড দিয়ে ATM থেকে টাকা তুলতে হলে কার্ড (আপনার কাছে যা আছে) এবং পিন (আপনি যা জানেন) — দুইটি প্রমাণ প্রয়োজন। ঠিক একই ধারণা অনলাইন অ্যাকাউন্টেও প্রযোজ্য।

2FA কীভাবে কাজ করে?

লগইন করার সময় প্রথমে আপনি পাসওয়ার্ড দেবেন। এরপর সার্ভার আপনার রেজিস্টার্ড ফোন বা অথেনটিকেটর অ্যাপে একটি দ্বিতীয় কোড পাঠাবে বা তৈরি করবে — আপনি সেই কোড ইনপুট করলে লগইন সম্পন্ন হবে। হার্ডওয়্যার টোকেনগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সময়ভিত্তিক কোড জেনারেট করে, যা আরও সুরক্ষিত।

2FA-এর ধরণসমূহ

  • এসএমএস-ভিত্তিক ওটিপি — সহজ কিন্তু কিছু ঝুঁকি আছে (SIM-swap আক্রমণ)।

  • অথেনটিকেটর অ্যাপ (Google Authenticator, Authy ইত্যাদি) — নিরাপদ ও স্থায়ী।

  • পুশ নোটিফিকেশন — ডিভাইসে অনুমোদন/অস্বীকৃতি বাটন; দ্রুত ও ব্যবহারবান্ধব।

  • হার্ডওয়্যার টোকেন (USB টোকেন বা টোকেন-প্যাস) — অত্যন্ত নিরাপদ।

  • বায়োমেট্রিক 2FA — ডিভাইস-ভিত্তিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট/ফেস আইডি ইন্টেগ্রেশন।

কেন 2FA প্রয়োজন?

  • হ্যাকারিং প্রতিরোধ: 2019 সালে মাইক্রোসফটের রিপোর্ট অনুযায়ী, অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট হ্যাকের ক্ষেত্রে 2FA সক্রিয় ছিল না — এটা বড় ঝুঁকি প্রমাণ করে।

  • পরিচয় চুরি ও আর্থিক ক্ষতি রোধ: ব্যক্তিগত এবং আর্থিক তথ্য সুরক্ষিত রাখে।

  • সহজ ও কার্যকর: সামান্য উদ্যোগে বড় নিরাপত্তা পাওয়া যায়।

সবক্ষেত্রে কি 2FA প্রয়োজন?

সবখানে বাধ্যতামূলক নয়। যেখানে ব্যক্তিগত/আর্থিক তথ্য নেই বা অল্প ঝুঁকি আছে সেখানে জরুরি নাও হতে পারে। কিন্তু নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে 2FA নিশ্চিতভাবে চালু করা উচিত:

  • ব্যাংকিং ও পেমেন্ট সেবাসমূহ (পেপাল, মোবাইল ব্যাংকিং)

  • ইমেইল (যেখানে রিসেট লিংক যায়)

  • ক্লাউড ব্যাকআপ/ফাইল স্টোরেজ (ব্যক্তিগত ছবি, নথি সংরক্ষণের জন্য)

  • সোশ্যাল মিডিয়া ও গেমিং অ্যাকাউন্ট (অ্যাকাউন্ট-হাইজ্যাকিং থেকে রক্ষার জন্য)

কিভাবে 2FA চালু করবেন — সহজ ধাপ

  1. আপনার অ্যাকাউন্টের Security বা Privacy সেটিংসে যান।

  2. Two-Factor Authentication বা 2-Step Verification অপশন খুঁজে বের করুন।

  3. পছন্দ মতো পদ্ধতি নির্বাচন করুন — অ্যাপ-ভিত্তিক (অফলাইন অথেনটিকেটর) নিরাপদ।

  4. নির্দেশনা মেনে সেটআপ সম্পন্ন করুন এবং recovery codes বা ব্যাকআপ বিকল্প সংরক্ষণ করুন।

  5. লক্ষ্য করুন: যদি ফোন বদলান, ব্যাকআপ কোড না রাখলে অ্যাক্সেস ফিরে পাওয়া জটিল হতে পারে — তাই recovery codes সেভ করা জরুরি।

পরামর্শ ও সতর্কতা

  • এসএমএস-ভিত্তিক 2FA ভালো — কিন্তু SIM-swap আক্রমণের ঝুঁকি আছে; তাই সম্ভব হলে অথেনটিকেটর অ্যাপ বা হার্ডওয়্যার টোকেন ব্যবহারে উৎসাহিত হন।

  • সব সময় recovery codes কোথাও নিরাপদে রেখে দিন।

  • গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাউন্টগুলোর জন্য আলাদা (ভিন্ন) পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন এবং পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ভাবুন।

  • ফাইনান্সিয়াল সেবা কিংবা বড় অ্যাকাউন্টে 2FA অপশন পেলে তা অবশ্যই চালু করুন।


এআইয়ের ছবি চিনবেন কীভাবে? সহজ কৌশল

 

এআই দিয়ে বানানো ছবি


বর্তমানে এআই দিয়ে তৈরি ছবি বা ডিপফেইক (Deepfake) অনেক সময় বাস্তবের মতোই লাগে। তবে কিছু কৌশল অনুসরণ করলে পার্থক্য বোঝা সম্ভব। নিচে ধাপে ধাপে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরা হলো।


১. ছবিটি জুম করে খেয়াল করুন

প্রথমেই ছবিটি জুম করে মানুষের চোখ, মুখ, চোয়াল, হাত ও আঙুলের দিকে ভালো করে লক্ষ্য করুন। অনেক সময় মুখের চারপাশ ঝাপসা হতে পারে বা আঙুলের সংখ্যা ও গঠন অস্বাভাবিক দেখাতে পারে। ভিডিও হলে কথার সঙ্গে ঠোঁটের ছন্দ না মিলতেও পারে।


২. মানুষের আবেগ ও অভিব্যক্তি মিলিয়ে দেখুন

এআই এখনও নিখুঁতভাবে মানুষের হাসি, কান্না বা উচ্ছ্বাস ফুটিয়ে তুলতে পারে না। বাস্তব মানুষের আবেগের সঙ্গে শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া মেলে, যা কৃত্রিম ছবিতে ঠিকভাবে নকল করা কঠিন।


৩. একবারে পুরো ছবি পর্যবেক্ষণ করুন

এআই-generated ছবিতে সাধারণত ছোটখাটো অসঙ্গতি থাকে। বিশেষ করে গ্রুপ ছবি বা জটিল দৃশ্য বানাতে গিয়ে ভুল চোখে পড়তে পারে—কারও হাতের আকার অস্বাভাবিক, কারও পোশাক বেমানান, কিংবা অবাস্তব আলো-ছায়ার উপস্থিতি।


৪. ব্যাকগ্রাউন্ড লক্ষ্য করুন

ডিপফেইক বা এআই ছবি বানাতে গিয়ে অনেক সময় ব্যাকগ্রাউন্ড বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। বিষয়বস্তুর সঙ্গে প্রেক্ষাপট অসামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে—যেমন ছায়ার দিক ঠিক না থাকা, বা অবাস্তব স্থান ও বস্তুর উপস্থিতি।


৫. ছবির ইতিহাস যাচাই করুন

ছবিটি কেন তোলা হয়েছে বা কোথায় প্রকাশিত হয়েছে তা খুঁজে দেখুন। সার্চ ইঞ্জিনে ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে এর উৎস পাওয়া যেতে পারে। জনপ্রিয় ব্যক্তি বা সেলিব্রিটিদের ছবির ক্ষেত্রে সহজেই বোঝা যায় আসল না নকল।


উপসংহার

এআই ছবি বা ডিপফেইক বোঝা এখন চ্যালেঞ্জিং হলেও উপরোক্ত কৌশলগুলো মেনে চললে পার্থক্য করা সহজ হয়। সর্বোপরি, ছবির সত্যতা যাচাই করতে সবসময় গবেষণাভিত্তিক মানসিকতা বজায় রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।


আরো বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন